গর্ভবতী অবস্থায় ১ মাস থেকে ১০ মাস পর্যন্ত দোয়া ও আমল সম্পর্কে জানুন
সম্মানিত পাঠক আসসালামুয়ালাইকুম, আপনি কি গর্ভবতী গর্ভাবস্থায় প্রথম মাস থেকে দশ মাস পর্যন্ত দোয়া ও আমল সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আপনার জন্য আজকের এই পোস্টটি গর্ভবতী অবস্থায় প্রথম মাস থেকে দশ, মাস পর্যন্ত কি কি দোয়া ও আমল করবেন সেসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত তথ্য আমার এই পোস্টটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
গর্ভবতী মায়ের দশ মাসের আমল, গর্ভের সন্তান নষ্ট না হওয়ার দোয়া, সেসব বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক, গর্ভবতী অবস্থায় প্রথম মাস থেকে দশ মাস পর্যন্ত দোয়া ও আমল সম্পর্কে। কোরআনের আলোকে কিভাবে আমল ও দোয়া করলে, গর্ভের সন্তান সুস্থ থাকবে সেসব বিষয় নিয়েও আলোচনা এই পোস্টটিতে আসুন জেনে নেওয়া যাক।
গর্ভবতী মায়ের ১০ মাসের আমল
গর্ভে সন্তান আসা নারীর জন্য সম্মান ও সৌভাগ্যের বিষয়। হাদিস শরিফে এসেছে নারী যখন গর্ভধারিণী হয়ে স্বামীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন তখন সর্বদা রোজা পালন এবং সারারাত নফল নামাজের সওয়াব লাভ হয়। আর যখন প্রসব বেদনা শুরু হয় তখন তার জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয় তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসীই জানে না।
সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার বিনিময়ে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (কান্নাকাটি করে মাকে বিরক্ত করে ঘুমাতে না দেয়) তাহলে সে আল্লাহর জন্য নিখুঁত ৭০টি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে। (তাবরানি: ৬৯০৮; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৪/৩০৫) গর্ভাবস্থায় কোনো নারী মারা গেলে তিনি শহিদি মর্যাদা লাভ করবেন। রাসুল (স.) বলেছেন ‘আল্লাহর রাস্তায় নিহত (শহিদ) হওয়া ছাড়াও আরও সাত ধরনের শহিদ আছে।
- পানিতে মৃত্যুবরণকারী শহিদ।
- মহামারিতে মৃত্যুবরণকারী শহিদ।
- পক্ষাঘাতে মৃত্যুবরণকারী শহিদ।
- অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী শহিদ।
- কোনো কিছুর নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুবরণকারী শহিদ এবং
- পেটের রোগের কারণে (কলেরা, ডায়রিয়া ইত্যাদিতে) মৃত্যুবরণকারী শহিদ।
- যে মহিলা গর্ভাবস্থায় মারা যাবে সেও শহিদ।’ (আবু দাউদ: ৩১১সুতরাং গর্ভবতী নারীদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে ইসলামে।
যে দোয়ার ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে মরিয়ম (আ.)-এর মতো রত্মগর্ভা কন্যা সন্তান দিয়েছেন যিনি নবী ঈসা (আ.)-এর মা। সুতরাং সুসন্তান বা পরহেজগার সন্তান লাভের জন্য গর্ভবতী নারীদের ওই দোয়াটি করার শিক্ষা দেয় ইসলাম।
- দোয়াটি হলো— رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء
- ‘রাব্বি হাবলি মিনলাদুনকা জুররিয়াতান তাইয়িবাতান ইন্নাকা সামিউদ্দুয়া
অর্থাৎ, ‘হে আমার পালনকর্তা! আপনার পক্ষ থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩৮)
নেক নিয়তে পুত্র সন্তান চেয়েও দোয়া করা যেতে পারে। যেমন-
- رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ ‘
- রাব্বি হাবলি মিনাস সালিহিন।
অর্থাৎ ‘হে আমার প্রতিপালক আপনি আমাকে সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দান করুন।’ (সুরা সাফফাত: ১০০)
গর্ভাবস্থার সুসংবাদটি বেশি মানুষকে জানানো উচিত নয়। অবশ্য ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সবাইকে জানাতে বাধা নেই। রাসুল (স.) বলেছেন ‘কিছু খুশির সংবাদ গোপন রাখতে হয়। কেননা প্রত্যেক সংবাদ শ্রবণকারী বন্ধু হয় না। (তাবরানি)
- হাদিসটির উদ্দেশ্য হলোঃ হিংসা ও বদনজরের প্রভাব মানুষের ওপর পড়ে। আর যে শিশুটি আগমন করতে যাচ্ছে তাকে বদনজর থেকে হেফাজতে রাখা একজন মায়ের দায়িত্ব। তাই মায়ের উচিত গর্ভের সংবাদ শুধু তাদেরই দেওয়া যারা তাতে খুশি হবে কোনোরকম খারাপ কিছুকে মনে স্থান দেবে না।আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করাও গর্ভবতী নারীর দায়িত্ব।
নামাজের প্রতি অধিক যত্নশীল হওয়া উচিত। যত বেশি সম্ভব কোরআন তেলাওয়াত করা উচিত। এছাড়াও সবসময় পবিত্র থাকা অজু অবস্থায় থাকার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইসলাম। এসব শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তিরও কারণ। নামাজের সময় হলে রাসুল (স.) বেলাল (রা.)-কে বলতেন নামাজের ব্যবস্থা করো এবং এর মাধ্যমে আমাকে তৃপ্ত করো। (আবু দাউদ: ৪৩৩৩) মা হতে যাওয়া নারীকে ধৈর্য ও অল্পে তুষ্টির পরিচয় দিতে হবে।
যেসব খারাপ অভ্যাস মানুষের জীবনকে নিকৃষ্ট বানিয়ে ফেলে যেমন হিংসা অহংকার মিথ্যা—এসব থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা গর্ভবতী নারীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনর্থক বা অপ্রয়োজনীয় কথা কাজ পরিহার করাও আরেকটি মূল্যবান আমল। বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়া উচিত। এসব কাজে অনাগত সন্তানও অংশগ্রহণ করে। ফলে তার ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে এবং আল্লাহর সামনে মায়ের প্রত্যেকটা আমলের সাক্ষী হবে সে।
হারাম খাবার থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে গর্ভাবস্থায়। এ সময় যেহেতু মায়ের রক্ত গ্রহণ করে সন্তান বড় হয় তাই এই রক্তে যেন পাপের সংমিশ্রণ না থাকে। হারাম কাজ যেমন—পরপুরুষের প্রতি কুদৃষ্টি ও কুকল্পনা করা টিভি কিংবা ডিভাইসের মাধ্যমে অনৈতিক কোনো কিছু উপভোগ করা বেপর্দা চলাফেরা করা—এসব থেকেও দূরে থাকা বাঞ্ছনীয়। আশা করা যায় আল্লাহ তাঁকে নেক সন্তান দান করবেন যা তাঁর পরবর্তী জীবনকে করবে সুখময়।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে ‘কষ্টের সঙ্গেই আছে সুখ।’ (সুরা ইনশিরাহ: ৬) আল্লাহ প্রত্যেক গর্ভবতী মাকে সব ধরনের জটিলতা থেকে নিরাপদ রাখুন। গর্ভকালীন সময়ে ইসলামি নির্দেশনাগুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন। সাধারণত বর্তমানে লক্ষ্য করা যায় যে বেশিরভাগ মেয়েদের সন্তান হতে সমস্যা হয় এবং সেই সন্তান গর্ভে আসার সময় বিভিন্ন ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। অনেক মেয়েদের দুর্ভাগ্যজনকভাবে গর্ভে সন্তান আসার পর সেটা নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য সে অনেক বেশি ভেঙে পড়ে এবং অনেক বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।
গর্ভের সন্তান নষ্ট না হওয়ার দোয়া
এ সকল বিপদ থেকে মুক্তি থাকার জন্য অবশ্যই কিছু আমল আছে যে আমল গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আপনার গর্ভে থাকার সন্তানকে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করে দেবে। আজকে আমরা কোরআন এবং হাদিসের আলোকে জানার চেষ্টা করব কোরবান আমলের মাধ্যমে গর্বে থাকা সন্তান যাতে নষ্ট না হয় সে সম্পর্কে আমরা জানবো।
কোরআনের আমলের মাধ্যমে গর্ভে সন্তানকে সুস্থ রাখা
আমরা গর্ভে থাক সন্তান থাকা অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের আমল করতে পারি। আসুন আমরা গর্ভবতী নারী গর্ভাবস্থায় কি কি দোয়া পাঠ করতে পারে এবং এই দোয়া গুলোর মাধ্যমে নিজের সন্তানকে সুরক্ষিত রাখতে পারে সে সম্পর্কে জানি।
সূরা সাফাত এর ১০০ নাম্বার আয়াত গর্ভবতী মায়েরা পাঠ করতে পারেন যেটা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আয়াত। এর অর্থ দাঁড়ায় “হে আমার পরওয়ারদেগার আমাকে এক নেক সন্তান দান করুন। এছাড়া সূরা ইব্রাহীম এর আয়াত নাম্বার ৪০ পাঠ করার মাধ্যমে গর্বে থাকা সন্তান সুরক্ষিত থাকে। সূরা ইব্রাহীম এর আয়াত নাম্বার ৪০ এর অর্থ”হে আমার পালনকর্তা আমাকে নামাজ কায়েম কারী করুন।
এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও নামাজ কায়েমকারী করুন। হে আমাদের পালনকর্তা এবং কবুল করুন আমাদের দোয়া।” এর পাশাপাশি সূরা আল ইমরান এর ৩৮ নাম্বার আয়াত এবং সূরা আল ফুরকানের৭৪ নাম্বার আয়াত আমরা পড়তে পারি। গর্বে থাকা সন্তান যদি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে তাহলে আমরা এই দোয়া গুলোর মাধ্যমে তাকে হেফাজত রাখতে পারি।
এর পাশাপাশি অনেক সময় সুরা রাত এর ৮ নং আয়াত একুশ বার পাঠ করে নিয়মিত বা নিজে তার পেটে ফু দিবেন ইনশাআল্লাহ আল্লাহর গর্ভের সন্তানকে হেফাজত করবে। অবশ্য গর্ভে থাকা সন্তান যখন নষ্ট হয়ে যায় তার থেকে কষ্টের ব্যাপার একজন মায়ের পক্ষে আর থাকে না। তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এই আমলগুলো একজন মাকে করতে হবে।
গর্ভবতী অবস্থায় প্রত্যেক মাসের আমল
গর্ভবতী অবস্থায় একজন মা প্রথম মাস থেকে তৃতীয় মাস পর্যন্ত সূরা লোকমান ও সূরা ইনশিকাকপড়তে পারেন। সূরা লোকমান ও ইনশিকাক এর মাধ্যমে গর্বে থাকা সন্তান অত্যন্ত সুস্থ থাকে এবং নেককার ও বুদ্ধিমান হয়ে থাকে। এছাড়াও গর্ভের সন্তান থাকা অবস্থায় চতুর্থ সপ্তাহ থেকে ষষ্ঠ সপ্তাহ পর্যন্ত সূরা ইউসুফ ও সূরা আল ইমরান পড়তে বলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি সপ্তম সপ্তাহ থেকে নবম সপ্তাহ পর্যন্ত সূরা মারিয়াম এবং সূরা মুহাম্মদ পড়তে হবে যার মাধ্যমে আপনার সন্তান সব চরিত্রের অধিকারী হবে। তবে সন্তান থাকা অবস্থায় অবশ্যই একজন মাকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে তার কারণ হলো যেকোনো সময় যে কোন ধরনের ছোটখাট সমস্যা থেকেও বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য সহজ উপায়
একটি স্বাভাবিক প্রসব যা যোনিপথে জন্ম নামেও পরিচিত বিভিন্ন অনুশীলন এবং প্রস্তুতি দ্বারা সমর্থিত হতে পারে। স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা বাড়ানোর কিছু সহজ উপায় এখানে দেওয়া হল।
- নিয়মিত ব্যায়ামঃ হাঁটা সাঁতার বা প্রসবপূর্ব যোগব্যায়ামের মতো মাঝারি ব্যায়াম আপনার শরীরকে ফিট রাখতে এবং শ্রমের জন্য প্রস্তুত রাখতে সাহায্য করতে পারে।
- স্বাস্থ্যকর ডায়েটঃ ফল সবজি গোটা শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য খাওয়া আপনাকে এবং আপনার শিশুকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। হাইড্রেটেড থাকাও গুরুত্বপূর্ণ।
- নিজেকে শিক্ষিত করুনঃ শ্রম শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল এবং প্রসবের সময় সাহায্য করতে পারে এমন অবস্থান সম্পর্কে জানার জন্য প্রসবপূর্ব ক্লাস বা কর্মশালায় যোগ দিন।
- শ্রমের সময় সক্রিয় থাকুনঃ ঘোরাফেরা করুন অবস্থান পরিবর্তন করুন এবং প্রসব ব্যথা পরিচালনা করতে এবং অগ্রগতিকে উৎসাহিত করতে বার্থিং বল বা অন্যান্য সাহায্য ব্যবহার করুন।
- শিথিলকরণ কৌশল অনুশীলন করুনঃ গভীর শ্বাস নেওয়া ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং ম্যাসেজের মতো কৌশলগুলি আপনাকে শান্ত রাখতে এবং প্রসবের সময় ব্যথা পরিচালনা করতে সহায়তা করতে পারে।
- ধৈর্য ধরুনঃ শ্রম অপ্রত্যাশিত হতে পারে এবং প্রতিটি মহিলার অভিজ্ঞতা আলাদা ধৈর্য ধরুন এবং বিশ্বাস করুন যে আপনার শরীর কী করতে হবে তা জানে।
- ইতিবাচক থাকুনঃ সহায়ক লোকেদের সাথে নিজেকে ঘিরে রাখুন এবং ইতিবাচক নিশ্চিতকরণের দিকে মনোনিবেশ করুন। একটি ইতিবাচক মানসিকতা আপনাকে শ্রমের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারে।
- হাইড্রেটেড থাকুনঃ হাইড্রেটেড থাকতে এবং আপনার শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে প্রসবের সময় প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।
- একটি Doula বিবেচনা করুনঃ একটি doula প্রসবের সময় মানসিক এবং শারীরিক সমর্থন প্রদান করে এবং আপনার জন্মগত পছন্দগুলির জন্য সমর্থন করতে সাহায্য করতে পারে।
- অবগত থাকুনঃ ব্যথা উপশম এবং হস্তক্ষেপের জন্য আপনার বিকল্পগুলি জানুন তবে এটি আপনার পছন্দের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে ওষুধ-মুক্ত জন্মের সম্ভাবনার জন্যও উন্মুক্ত থাকুন।
- মোবাইল থাকুনঃ প্রসবের সময় দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকা এড়িয়ে চলুন পরিবর্তে অগ্রগতি উত্সাহিত করতে নিয়মিতভাবে ঘুরে বেড়ান হাঁটাহাঁটি করুন বা অবস্থান পরিবর্তন করুন।
- পেরিনিয়াল ম্যাসেজঃ প্রায় ৩৪ সপ্তাহ থেকে শুরু করে মৃদু পেরিনাল ম্যাসেজ যোনির চারপাশের টিস্যুগুলির নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে সম্ভাব্যভাবে প্রসবের সময় ছিঁড়ে যাওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে।
- আপনার শরীরকে বিশ্বাস করুনঃ মনে রাখবেন যে আপনার শরীরটি প্রসবের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং আপনার জন্ম দেওয়ার ক্ষমতার উপর আস্থা রাখুন। আপনার প্রবৃত্তি শুনুন এবং আপনার জন্ম দলের সাথে আপনার প্রয়োজন যোগাযোগ করুন।
- চিকিৎসা পরামর্শ অনুসরণ করুনঃ সর্বদা আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পরামর্শ অনুসরণ করুন এবং একটি সুস্থ গর্ভাবস্থা এবং নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করতে সমস্ত প্রসবপূর্ব অ্যাপয়েন্টমেন্টে যোগ দিন।
মনে রাখবেন যদিও এই অভ্যাসগুলি স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে কখনও কখনও আপনার এবং আপনার শিশুর স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য চিকিত্সার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন শ্রম এবং প্রসবের সময় নমনীয় এবং খোলা মনে থাকা অপরিহার্য।
নরমাল ডেলিভারির আমল: শাইখ উসাইমিন (রহ.) আমল
শাইখ উসাইমিন (রহ.) বলেছেন গর্ভবতী নারী সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে কষ্টের সময় এ সমস্ত আয়াত পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা অনেকের উপকার করেন । এই নরমাল ডেলিভারির আমলগুলোর মধ্যে অত্যন্ত কার্যকরী একটি আমল কোন মহিলা অথবা কোন লোক নির্ধারিত আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁক দিবে ।
তারপর সে পানি গর্ভবতীকে পান করাবে এবং তা দিয়ে তার পেট মালিশ করবে । সম্ভব হলে ভুক্তভোগী নারীকেও ফুঁক দিবে । নরমাল ডেলিভারির আমলের আয়াতগুলো হলো
- সুরা রাদের ৮ নং আয়াত
- সুরা ফাতির ১১ নং আয়াত
- সুরা নাহাল ৮৬ নং আয়াত
- সুরা যিলযালের ৪ নং আয়াত
- পবিত্র কোরআন ঘেঁটে আয়াতগুলো বের করে একত্রে অর্থসহ নিচে দেওয়া হল ।
- সুরা রাদের ৮ নং আয়াত:
- اللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَحْمِلُ كُلُّ أنتَى وَمَا تَغِيضُ الْأَرْحَامُ وَمَا تَزْدَادُ وَكُلَّ شَيْءٍ عِندَهُ بِمِقْدَارٍ (۸)
অনুবাদ: প্রত্যেক নারী যে গর্ব ধারণ করে আল্লাহ তা জানেন এবং মাতৃগর্ভে যা কমে ও বাড়ে তাও এবং তার নিকট প্রত্যেক জিনিসের এক নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে ।
- সুরা ফাতিরের ১১ নং আয়াত:
- وَاللَّهُ خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ جَعَلَكُمْ أَزْوَاجًا ۚ وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أَنتَى وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلْمِهِ: وَمَا يُعَمَّرُ مِن مُعَمَّرٍ وَلَا يُنقَصُ مِنْ عُمُرِهِ إِلَّا فِي كِتَابٍ إِنَّ ذُلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ (۱۱)
অনুবাদ: আল্লাহ তোমাদেরকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন তারপর শুক্রবিন্দু দ্বারা তারপর তোমাদেরকে জোড়া জোড়া বানিয়ে দিয়েছেন নারী যা গর্ভে ধারণ করে এবং যা সে প্রসব করে তা আল্লাহ তাআলার জ্ঞাতসারেই করে ।
কোনো দীর্ঘায়ু ব্যক্তিকে যে আয়ু দেওয়া হয় এবং তার আয়ুতে যা কমকরা হয় তা সবাই এক কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে বস্তু তো এসব কিছুই আল্লাহর পক্ষে অতি সহজ ।
- সুরা নাহালের ৮৭ নং আয়াত
- وَأَلْقَوْا إِلَى اللَّهِ يَوْمَئِذٍ السَّلَمَ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُوا يَفْتَرُونَ (۸۷)
অনুবাদ: সেদিন আল্লাহর সামনে তারা আনুগত্য মূলক কথা বলবে আর তারা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করতো সেদিন তার কোন হদিসই তারা পাবে না।
- সুরা যিলযালের ৪ নং আয়াত:
- يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا. (۴).
অনুবাদ: সে দিন পৃথিবী তার যাবতীয় সংবাদ জানিয়ে দেবে।
শেষকথা গর্ভবতী অবস্থায় ১ মাস থেকে ১০ মাস পর্যন্ত দোয়া ও আমল সম্পর্কে জানুন
প্রিয় পাঠক নরমাল ডেলিভারির জন্য কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত নির্ধারিত কোন আমল নেই তবে বিশ্বখ্যাত অনেক মুহাক্কিক আলেম এবং পীর-মাশায়েখ নরমাল ডেলিভারির আমলের কথা বলেছেন।তাদের ওই নরমাল ডেলিভারির আমলগুলো পরীক্ষিত উপরে সেই আমলগুলো উল্লেখ করা হয়েছে ।
ঐগুলো ট্রাই করে দেখুন আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন । সবর করুন বেশি বেশি দোয়া করুন সন্তান পৃথিবীতে আসার জন্য মায়ের পেটে এসেছে সময়মতো ডেলিভারি হবে ইনশাআল্লাহ ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url