হিপ জয়েন্ট অপারেশনের আগের - এবং হিপ জয়েন্ট অপারেশনের পরের সমস্যাগুলো কি কি

সম্মানিত পাঠক বন্ধুরা আজকে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি সে বিষয়টি হচ্ছে হিপ জয়েন্ট অপারেশনের আগের এবং পরের সমস্যা গুলো কি কি সেসব বিষয়ে বিস্তারিত কিছু তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন আশা করছি আমার এই বাংলা আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন এবং অনেক না জানা তথ্য জানতে পারবেন আপনাদেরকে এরকম নতুন নতুন তথ্য তুলে ধরার জন্য আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
হিপ জয়েন্ট অপারেশনের আগের
আমরা কমবেশি প্রায় সকলেই হিপ জয়েন্ট ব্যথা নিয়ে ভুবে থাকি কিন্তু আমরা জানি না হিপ জয়েন্ট অপারেশন কি এবং হিপ জয়েন্ট অপারেশনের পরে কি কি সমস্যা হতে পারে তাই চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যায় হিপ জয়েন্ট অপারেশনের আগের এবং হিপ জয়েন্ট অপারেশনের পরের সমস্যা গুলো কি কি হতে পারে সেসব বিষয়।

হিপ জয়েন্ট অপারেশন

হিপ রিপ্লেসমেন্ট অপারেশনের প্রয়োজনীয়রা নির্ধারণের জন্য ডায়াগনষ্টিক পরীক্ষা নিরীক্ষা
এই রোগে যদি প্রাথমিক চিকিৎসায় কোনো কাজ না হয়, তবে আপনার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এই রোগের অন্তর্নিহিত কারণ নিরূপণ করার জন্য আপনাকে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করবার পরামর্শ দেবেন। এই পরীক্ষাগুলির রিপোর্ট অর্থাৎ ফলাফলের ভিত্তিতে কোন ধরণের সার্জারি বা অপারেশন করা হবে, সেই বিষয়ে চিকিৎসক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এই পরীক্ষাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক নড়াচড়া শারীরিক ভাবে পরীক্ষা করে দেখা, এক্স রে পরীক্ষা, এম আর এই বা ই কে জি টেস্ট ইত্যাদি।
এই সকল পরীক্ষার মাধ্যমে অসুবিধা গুলি হাড়ের থেকে উদ্ভূত না স্নায়ু সম্বন্ধীয়, তা সুনির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়। এছাড়াও, চিকিৎসক আপনাকে আনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বাত ও হাড়ের অসুখ-বিসুখের পূর্বতন ইতিহাসের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন, কেননা পরিবারে কারোর আর্থ্রাইটিসের সমস্যা থাকলে আপনারও এই রোগ হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। এর সাথে, অপনার চিকিৎসক আপনার নিজের পুরোনো অসুখ ও চোট আঘাতের ইতিহাস জানতে চাইতে পারেন।
  • রক্ত দানঃ টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট অপারেশনের সময় প্রচুর পরিমাণ রক্তক্ষরণ হতে পারে। এইজন্য, অপারেশনের পূর্বেই রোগীদের অনুরোধ করা হয় যে তাঁরা যেন প্রয়োজনীয় পরিমাণ রক্ত দান করেন। এই রক্ত জমাট করে সংরক্ষন করা হয় এবং এর মাধ্যমে আপনি অপারেশনের সময় নিজের রক্তই গ্রহণ করতে।
  • সার্জারির ঝুঁকিঃ এই অপারেশনে সাধারণত যেসব ঝুঁকি বা জটিলতার সম্ভাবনা থাকে, সেগুলি হলো। সংক্রমণ কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনে দেহের প্রতিক্রিয়া অপারেশনের সময় হাড় ভেঙে যাওয়া রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া বা অন্যান্য রক্তপাতের সমস্যা কৃত্রিম জয়েন্ট নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সরে যাওয়া না আলগা হয়ে যাওয়া মেটাল অন মেটাল সংক্রান্ত জটিলতা।
  • অপারেশনের প্রস্তুতিঃ এই অপারেশনের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়না। তবে সাধারণ প্রস্তুতি হিসেবে অপারেশনের ১০-১২ ঘন্টা আগে থেকে কোনো রকম খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। তার সাথে, ন্যূনতম ২৪ থেকে ৭২ ঘন্টা পূর্বে সমস্ত রকম তামাকজাত পদার্থ সেবন, ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করে দিতে হবে। অপারেশনের পূর্বে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে আপনার সমস্ত রকম পূর্ববর্তী রোগের ইতিহাস এবং কী কী ওষুধ খান তার বিস্তারিত বিবরণ দিতে হবে।

হিপ প্রতিস্থাপনের পরে আজীবন সতর্কতা

এর মধ্যে সকল প্রকার ব্যথার ওষুধ রক্ত তরল করবার ওষুধ (ব্লাড থিনার), চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত নিজে থেকে যেসব ওষুধ খান যেমন (ওভার দা কাউন্টার বা OTC ড্রাগ) ভিটামিন, এমনকি আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথি ওষুধের বিবরণও দিতে হবে। আপনার যদি কোনো ওষুধে অ্যালার্জি থাকে তাও চিকিৎসককে অবশ্যই জানান। আপনার সংশ্লিষ্ট পুষ্টিবিদ বা ডায়েটিশিয়ান আপনাকে অপারেশনের পূর্বে কী কী খাবার খাবেন অথবা খাবেন না, তার বিস্তারিত তালিকা দিয়ে সাহায্য করবেন। যদি আপনি অপারেশনের পূর্বে এই প্রয়োজনীয় তালিকা না পেয়ে থাকেন, তবে অবিলম্বে অপনার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও সেবা প্রদানকারী ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করুন।

হিপ রিপ্লেসপমেন্ট অপারেশনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল পায়ের দৈর্ঘ্য ছোট হয়ে যাওয়া, কেননা কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ফলে অনেক সময়ই পায়ের দৈর্ঘ্যের হেরফের হয়ে যায়।
হিপ প্রতিস্থাপনের পরে আজীবন সতর্কতা টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারির পর আপনি হাসপাতাল থেকে যেসব সেবা শুশ্রূষা পাবেন অপারেশনের পরের দিন থেকেও ফিজিক্যাল থেরাপি শুরু করা হবে।রোগীকে স্বচ্ছন্দে হাঁটাচলা করার জন্য ক্রাচ বা ওয়াকার দেওয়া হবে অপারেশনের পর কয়েকদিন রোগীকে দুই পায়ের মাঝখানে বালিশ বা কুশন নিয়ে থাকতে হবে, যাতে কৃত্রিম অঙ্গঠিকঠাকভাবে জায়গায় বসে যায়। অপারেশনের সেলাইয়ের ক্ষত স্থান আপনার পরবর্তী চেক আপের সময় ভালোভাবে পরিষ্কার করে ড্রেসিং করে দেওয়া হবে।
এটি সাধারণত অপারেশনের ২ সপ্তাহ পর করা হয়। মনে রাখবেন, সেলাইয়ের ক্ষতস্থান না শুকোনো পর্যন্ত খুব সাবধানে এবং পরিষ্কার পরিছন্ন রাখতে হবে। এর জন্য আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে এবং যথাযথ নিয়ম মেনে ড্রেসিং করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ক্ষতস্থান না শুকোনো অব্দি সেখানে কোনো রকম ক্রীম, মলম, লোশন বা জল লাগাবেন না। অপারেশনের ৩ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রোগী নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, অপারেশনের পর ১ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত কোনো রকম ভারী কাজ বা হিপ জয়েন্ট ঘুরিয়ে করতে হয় এমন কোনো কাজ করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি চালিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতে হবে।
টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারির জন্য কতদিন হাসপাতালে থাকতে হবে?
  • উওরঃ সাধারণত হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারির জন্য ৪ থেকে ৬ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়। কিন্তু এই সময়কাল একেকজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে একেকরকম হতে পারে। নির্দিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়কাল তাঁর শারীরিক অবস্থা এবং উন্নতির হারের ওপর নির্ভর করে। কোননকোন ক্ষেত্রে রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত উন্নতির জন্য আরো ভালো চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষনের প্রয়োজনে চিকিৎসক অতিরিক্ত কিছুদিন হাসপাতালে থাকার পরামর্শ দিতে পারেন।
হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি কি ব্যর্থ হতে পারে?
  • উওরঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃত্রিম অঙ্গ ঠিকঠাক ভাবে স্থাপিত নাও হতে পারে, বা হাড়ের কোনো অসুবিধার জন্য অপারেশনের পরে খুলে যেতে বা আলগা হয়ে যেতেও পারে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি পুরোপুরি ভাবে সফল হয়।
সার্জারি ব্যর্থ হলে কী কী হতে পারে?
  • উওরঃ যদি আপনার শারীরিক অবস্থা বা কৃত্রিম অঙ্গের প্রতি শরীরের প্রতিক্রিয়ার কারণে আপনার হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি সফল না হয়, তবে সেক্ষেত্রে আপনার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক আপনাকে পুনরায় অপারেশন করানোর পরামর্শ দিতে পারেন।
এই সার্জারির পর কি সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করা যাবে?
  • উওরঃ হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি করানোর পর সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা বা মাটিতে বসার মত কাজগুলি যথাসম্ভব কম করাই বাঞ্ছনীয়।
সার্জারি করানোর পরও আমার ব্যথা কেন হচ্ছে?
  • উওরঃ হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি করানোর পর কিছুদিন ব্যথা থাকা একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। এই ব্যথা সাধারণত অপারেশনের পরের প্রথম কয়েকদিন, বিশেষত ফিজিওথেরাপি করানোর সময় বা তার অব্যবহিত পরে কিছুদিন থাকে। কিন্তু যদি এই ব্যথা অপারেশনের ৩ সপ্তাহ পরও একইরকম থাকে, তবে অবিলম্বে আপনার চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
আমার হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি কি আজীবন স্থায়ী হবে?
  • উওরঃ সাধারণত হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি ১০ থেকে ১২ বছর কার্যকরী থাকে। কিন্তু আপনার শারীরিক শ্রমের পরিমাণ, হাড়ের ক্ষয়ের পরিমাণ এবং কৃত্রিম অঙ্গের স্থায়িত্বের ওপর এর দীর্ঘায়ু নির্ভর করে।
  • সার্জারির ঝুঁকিঃ এই অপারেশনে সাধারণত যেসব ঝুঁকি বা জটিলতার সম্ভাবনা থাকে, সেগুলি হলো।
  • সংক্রমণ।
  • মেটাল অন মেটাল সংক্রান্ত জটিলতা।
  • অপারেশনের সময় হাড় ভেঙে যাওয়া।
  • কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনে দেহের প্রতিক্রিয়া।
  • রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া বা অন্যান্য রক্তপাতের সমস্যা।
  • কৃত্রিম জয়েন্ট নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সরে যাওয়া না আলগা হয়ে যাওয়া।
আরো পড়ুনঃ হৃদরোগীদের প্রেশার হাই হয়ে গেলে কি করা উচিত
হিপ রিপ্লেসপমেন্ট অপারেশনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল পায়ের দৈর্ঘ্য ছোট হয়ে যাওয়া, কেননা কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ফলে অনেক সময়ই পায়ের দৈর্ঘ্যের হেরফের হয়ে যায়।
অপারেশনের পরবর্তী সেবা যত্ন এবং সাবধানতা।

লেখক এর মন্তব্যঃ হিপ জয়েন্ট অপারেশনের আগের - এবং হিপ জয়েন্ট অপারেশনের পরের সমস্যাগুলো কি কি

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজকে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি আশা করছি আপনারা অনেক কিছু না জানা তথ্য জানতে পেরেছেন যদি নতুন কোন তথ্য পেয়ে থাকেন তাহলে একটা লাইক কমেন্ট শেয়ার করে জানিয়ে যাবেন আর এরকম আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url